ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলা :
এটাই হল এর প্রধান চিকিৎসা। একমাত্র খোদভীতিই মানুষকে এ শয়তানি খপ্পর থেকে মুক্তি দিতে পারে। পরকালে জবাবদিহিতা এবং জাহান্নামের কঠিন শাস্তির ভয় মানুষকে মাদকের কুফল থেকে দূরে রাখতে পারে।
প্রশাসনিক প্রতিরোধ : নৈতিক উপদেশের পাশাপাশি প্রশাসনিক প্রতিরোধ অবশ্যই জরুরি। এটিও দুভাবে হতে পারে।
এক : রাষ্ট্রীয়ভাবে- যেমন, ধূমপান মাদক এবং জুয়ায় অভ্যস্থদের সার্ভিস বুকে লাল কালি মেরে রাখা। যাতে তাদের প্রমোশন আটকে থাকে। এ জন্য নবীজি (সা.)-এর আমলের প্রথমদিকে মদ্যপায়ীকে সর্বসমক্ষে হাত দিয়ে, খেজুরের ডাল দিয়ে বা জুতা দিয়ে মারতে বলতেন। তিরস্কার ও নিন্দা করতে বলতেন, যাতে সে লজ্জিত হয় এবং ভীত হয়। মদের পাত্রগুলো ভেঙে ফেলা হতো। মদ তৈরি করা ও আমদানি করা সব বন্ধ করে দেয়া হতো। মদ তৈরির সব সরঞ্জাম ধ্বংস করে জ্বালিয়ে দেয়া হতো।
পরে আবুবকর (রা.)-এর আমলে ৪০টি বেত বা দোররা এবং উমর ফারুকের (রা.) খিলাফতকালে ৮০টি বেত বা দোররা মারার বিধান জারি করা হল। সেই আলোকেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরপরই মদ জুয়া হাউজি ঘোড়দৌড়ের বিরুদ্ধে উদ্যোগ নিয়ে সংবিধানে তা সন্নিবেশিত করেছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় বর্তমানে রাষ্ট্রর নির্বাহী বিভাগ থেকে কঠোর ভূমিকা নেয়া হচ্ছে এখন বিচার বিভাগকেও এর বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। প্রশাসনকে নতুন করে মদের লাইসেন্স দেয়া বন্ধ করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে এর উৎপাদন আমদানি বিপণন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
দুই : সামাজিক প্রতিরোধ- মানুষ সামাজিক জীব। তাকে সমাজে বসবাস করতে হয়। যে সমাজে সে বসবাস করে, সে সমাজের লোকেরা তাকে দরদ দিয়ে এর নেতিবাচক দিক নিয়ে বুঝাবে যদি এরপরও সে মাদকে অভ্যস্থ থাকে তবে সামাজিক বয়কট ও ঘৃণা প্রকাশ করবে, তাহলে সে লোকলজ্জার ভয়ে হলেও এ বদভ্যাস ত্যাগ করবে।
এ কারণেই মদ্যপায়ীর শাস্তি নবীজি (সা.) জনসমক্ষে দিতেন। এটি শুরু করতে হবে পরিবার থেকে যেহেতু পরিবারই সমাজের প্রথম ইউনিট। পরিবার ব্যর্থ হলে সমাজের ওপর তার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে তাকে চোখে চোখে রাখতে হবে যাতে যে নেশাখোর এবং অসামাজিক লোকদের দলে ভিড়ে না যায়। আমরা যদি দরদের সঙ্গে সবাইকে নিয়ে মাদক এবং জুয়ার বিরুদ্ধে এগোতে পারি তাহলে একটি সুন্দর সমাজ ও দেশ গড়ে উঠবে।
মূল লেখক : মইন চিশতি, প্রাবন্ধিক ও ধর্মচিন্তক
No comments:
Post a Comment